কোরবানির ঈদ সামনে মশলার বাজারে উত্তাপ
কোরবানির ঈদ সামনে মশলার বাজারে উত্তাপ
স্টাফ রিপোর্টার
কোরবানির ঈদের বাকি প্রায় দেয় মাস। স্বাভাবিকভাবেই এই ঈদে প্রায় সব মুসলিম পরিবারেই পশু জবাই কিংবা মাংস রান্না হয়। ফলে মসলার বাজারে এ সময় বাড়তি চাহিদা থাকে। এই চাহিদাকে পুঁজি করে এরইমধ্যে মসলার বাজারে কারসাজি শুরু করছে ‘অতি মুনাফালোভী’ ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা বলছেন, ঈদের সময় দাম না বাড়িয়ে দেড় মাস আগেই বাড়ানো হচ্ছে। যাতে কেউ বলতে না পারে ঈদে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। আর তদারকি সংস্থার চাপে মূল্য কমাতে হলেও অতিরিক্ত মুনাফা রেখেই কমাতে পারে। অন্যদিকে বিক্রেতারা জানান, মসলার বাজার আমদানি নির্ভর। ঈদের আগে মশলার আমদানি কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে মশলার দাম বেড়েছে। গতকাল সরেজমিনে রাজধানীর মালিবাগ, হাতিরপুল, রামপুরা কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এলাচ, জিরা, দারুচিনি, রসুন, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, হলুদ ও আদাসহ অধিকাংশ মসলার দামই বেড়েছে। এপ্রিল মাসের শুরুতে ঢাকার বাজারে যে রসুনের কেজি ১৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে শুক্রবার তা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। অন্যদিকে এক মাস আগে খুচরা বাজারে যে দেশি আদা ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তা ৪৫০ টাকা। আর আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা, যা এক মাস আগে ২২০ টাকা ছিল। বাজারে বেড়েছে মসলার গুরুত্বপূর্ণ আরেক অনুষঙ্গ জিরার দামও। রোজার ঈদের আগে যে জিরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৮৫০ টাকায়। দাম বাড়ার দৌড়ে পিছিয়ে নেই লবঙ্গ-এলাচ-দারুচিনিও। এ দিন প্রতিকেজি লবঙ্গ ১৬৮০ থেকে ১৯০০ টাকা, এলাচ ৩০০০ থেকে ৩৮০০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
অন্যদিকে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, যা এক মাস আগেও ৬০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা এক মাস আগে ১৩০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি শুকনামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ টাকা, যা এক মাস আগে ৩৭০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি হলুদ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা, যা এক মাস আগে ৩২০-৩৩০ টাকা ছিল। কারওয়ান বাজারে মশলা কিনতে আসা জোবায়ের নামে এক বেসরকারি চাকুরিজীবী বলেন, ঈদের সময় দাম না বাড়িয়ে দেড় মাস আগেই বাড়ানো হচ্ছে। যাতে কেউ বলতে না পারে ঈদে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। আর তদারকি সংস্থার চাপে মূল্য কমাতে হলেও অতিরিক্ত মুনাফা রেখেই কমাতে পারে। এই বাজারের খুচরা মসলা বিক্রেতা মো. শরিফ বলেন, মসলার বাজার আমদানি নির্ভর। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমদানি করে। তারাই দাম বাড়ায়। পাইকারি মশলা ব্যবসায়ী গফ্ফার খান বলেন, দেশে যে পরিমাণ মসলাপণ্যের চাহিদা রয়েছে তার তুলনায় এবার আমদানি কম হয়েছে। তাছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, শুল্ক বাড়ানোর কারণে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই কোরবানির ঈদের দুই মাস আগে থেকেই এবার মসলা সংগ্রহ করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা, যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। মশলার বাজারের এমন হুলস্থূল পরিবেশ নিয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এটা নতুন না। প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের আগে মশলার দাম বাড়ায় অতিমুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা। এখনই পদক্ষেপ না নিলে ঈদের আগেই মূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ